চলমান জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে দেশের ইতিহাসের উত্তম নির্বাচনের বার্তা দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেছেন, ‘এবার ডিসি সম্মেলনে আমরা (ইসি) আমন্ত্রণ পেয়েছি। ১৮ ফেব্রুয়ারি ইসির জন্য একটি নির্ধারিত সেশন রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কমিশনের আলোচনা হয়, নির্দেশনাও থাকে। আমাদের আমন্ত্রণ করা হয়েছে, তাই আমরা যাব। এছাড়া নির্বাচনের পার্ট অ্যান্ড পার্সেল (অপরিহার্য) হলো জেলা প্রশাসন।’
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে ডিসিরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও রয়েছে। এবার যেহেতু অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, এই নির্বাচন না হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আমরা একটা উত্তম নির্বাচন করতে চাচ্ছি। যেকোনো মূল্যে সেটা করতে হবে। বার্তাটি আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব।’
মাঠ প্রশাসন কমিশনের কথা শোনে না, এমন একটি সমালোচনা রয়েছে; এক্ষেত্রে কী করে তাদের কথা শোনানোর নির্দেশনা দেবেন— এমন প্রশ্নে জবাবে কমিশনার বলেন, ‘এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, এই প্রশাসনকে নিয়েই হয়েছে। যেহেতু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ বা প্রভাব থাকবে না, সেহেতু আমরা আশাবাদী যে সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন হবে। কারণ আমাদের সামনে ভালো উদারহরণও রয়েছে, খারাপ উদাহরণও রয়েছে। কমিশন বিশ্বাস করে খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি হবে না এবং উত্তম নির্বাচন হিসেবে এটি বাংলাদেশের ইতিহাস হবে।’
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে: ইসি সানাউল্লাহ
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি এসেছে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায়, সেখানে দলটির নিবন্ধন বাতিলের দাবিও এসেছে। আপনাদের ভাবনা কী—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের এ বিষয়ে বলার সময় আসেনি। আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। আরও সময় লাগবে আমাদের। এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না, সময়ই আমাদের গাইড করবে।’
ডিসিদের দলীয় মানসিকতার বিষয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনের কাজে সহায়তা করতে সবাই বাধ্য। যখন তফসিল হবে ও ইসি যখন মনে করবে, যেখানে যে নিরপেক্ষ ডিসিকে পদায়ন করা প্রয়োজন, তখন সেই বিষয়ে কমিশন কঠোর থাকবে।’
নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, কমিশন এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে আমরা পাইলটিং করতে পারি।’
সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ প্রসঙ্গে এই কমিশনার বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা আবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। বর্তমান যে আইন, সেটির কিছু পরিবর্তন না হলে যেমন আছে, তেমনই থাকবে। আর আইন পরিবর্তন হলে মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী হবে। আমরা আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ নিচ্ছি। এটি জটিল প্রক্রিয়া।’
বর্তমান আইনে পুনর্বিন্যাস করার সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সংশোধন হলেই হবে। প্রশাসনিক ব্যবস্থার সুবিধা, উন্নয়ন কর্মের সুবিধা, জনসংখ্যার বিষয়, ভৌগোলিক অবস্থা ইত্যাদি সবকিছু মিলিয়ে বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতেই, তারপর মানুষের চাহিদার বিষয়টিও দেখতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নির্বাচন কমিশনের কাছে যথোপযুক্ত মনে হলে সেটিই হবে। কোনো সময়সীমা নির্ধারণ না করা হলেও যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি করা হবে।’