বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পিআর আমি নিজেই বুঝি না। জনগণ বুঝবে কী! গণভোট হতে হবে বা পিআর হতে হবে, না হলে ভোট হবে না— এইগুলো বাদ দেন। দেশের মানুষ একটি নির্বাচন চায়। পিআর দেশের মানুষ বোঝে না। পিআরটা আবার কি? আগে ভোট হোক, তারপর কার কী দাবি আছে সেটা সংসদে গিয়ে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। আপনারা দেশটাকে বাঁচান, বিভাজন সৃষ্টি করবেন না।’
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের গোপালপুর স্কুল মাঠে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘পিআর নিয়ে তর্ক-বিতর্ক পার্লামেন্টে গিয়ে হবে। যে সব মতে দলগুলো একমত সেগুলো জুলাই সনদে স্বাক্ষর হবে, বাকি মতের জন্য গণভোট হবে। দয়া করে নির্বাচনটা দিয়ে এসব অস্থিরতা কাটান। আর হিংসার রাজনীতি চাই না, হিন্দু-মুসলিমের বিভেদ চাই না; সবাই মিলে শান্তিতে থাকতে চাই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অতীতে সরকারে ছিলাম, কীভাবে পরিচালনা করতে হয় জানি। বিএনপি নির্বাচিত হলে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। প্রত্যকটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। কৃষকদের দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেওয়া হবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণ যাকে ভোট দেবে তিনি নির্বাচিত হবেন। আর ভাগাভাগি করবেন না, দেশটার ক্ষতি করবেন না। একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চাই। সৌহার্দ্য আর ভ্রাতৃত্বের মধ্যে থাকতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু প্রতিষ্ঠান দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমেছে, তাদের উদ্দেশ্য ভালো মনে হয় না। আপনাদের দাবিদাওয়াগুলো আপাতত বন্ধ রাখুন। আর বিভাজন সৃষ্টি করবেন না। পিআর নিয়ে মিছিল-মিটিং বন্ধ করুন। দয়া করে নির্বাচনটা হতে দিন। বাংলাদেশের মানুষ বাঁচুক। দেশের অস্থিরতা কাটুক। আপনাদের কাছে অনুরোধ, সঠিক সিন্ধান্ত নিন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী ১৭ অক্টোবর সংস্কার সনদে সই হবে। কিসের সংস্কার? সংস্কার কাকে বলে? কী কঠিন কঠিন শব্দ! তারপরও আমরা করছি। কারণ সংস্কার হলো ঘরের টিন বদলানোর মতো। ঘরের দরজা বা টিন যেমন কয়েক বছর পরপর বদলাতে হয়, তেমনি রাজনীতিতেও কিছু সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ও ছাত্ররা মনে করেছে দেশটাকে ঠিক করতে হলে সংস্কার করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিহিংসা ও বিভেদের রাজনীতি চাই না। আমরা চাই একটি শান্তির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হোক। আর ভাগাভাগি করবেন না, দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এবার সবাই মিলে সত্যিকার অর্থে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমি ১১ বার কারাগারে গেছি। শেখ হাসিনা আমাকে ভয় করত, যে কারণে কারাগারে পাঠাত। একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য আমাদের অনেক ছেলে প্রাণ দিয়েছে। তাই আসুন সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করি।’
এ সময় গড়েয়া ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীমতভক্তিবিনয় স্বামী মহারাজ, লসকরা গৌড়ীয় মঠ এর ধর্মীয় গুরু স্বামী ভক্তিকেতন মহারাজ, বিএনপির জেলা সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিনসহ দলটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন গড়েয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম রেদো।