ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা জাতীয় নাগরিক কমিটির দুই সদস্যকে ‘ছাত্রলীগ’ আখ্যা দিয়ে পেটানোর ভিডিও ধারণকালে সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় নাসিরনগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কে এম বশির উদ্দিন তুহিনের দিকে আঙুল তুলেছেন গুরুতর আহত ওই সাংবাদিক।
একুশের প্রথম প্রহরে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে নাসিরনগর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
বেধড়ক মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দৈনিক কালবেলা ও এনটিভির নাসিরনগর উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। হামলায় তার মুখ, মাথাসহ শরীরে বিভিন্ন অংশ জখম হয়েছে।
আহত আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, শহিদ দিবদের সংবাদ সংগ্রহ করতে তিনি গতরাতে শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে যান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা জাতীয় নাগরিক কমিটির দুই সদস্যকে ‘ছাত্রলীগ’ আখ্যা দিয়ে পেটাতে থাকেন। ঘটনাটি মোবাইল ফোনে ধারণ করতে গেলে বশির উদ্দিন ও তার সমর্থকরা তার দিকে তেড়ে আসেন।
তিনি বলেন, ‘এ সময় বশির আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে প্রথমে রড দিয়ে আঘাত করে। পরে তার ভাতিজারাসহ অন্যান্য বিএনপিকর্মীরা রড, চাপাতি নিয়ে আমার ওপর উপর্যুপরি হামলা চালায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।’
বিষয়টি জানতে অভিযুক্ত বশির উদ্দিন তুহিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।
তবে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক।’
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল আলম বলেন, ‘যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন: বেনাপোলে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫
অপরদিকে, জেলার বিজয়নগর উপজেলায় শহিদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মো. বিল্লাল মিয়া ও জীবন আলী নামে দলটির দুই কর্মী আহত হয়েছেন।
পরে তাদের বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ এ বিষয়ে জানায়, রাতে শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় মহসিন ও শাহ আলম গ্রুপ একসঙ্গে ফুল দিতে গেলে বাদানুবাদ থেকে এই সংঘর্ষ ঘটে।
বিজয়নগর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’